কবিতা

স্মরণদেব
অনিলেশ গোস্বামী
বিষ্ণু বিশ্বাস
বিশ্বনাথ কুন্ডু
কস্তুরী সিনহা
কাশীনাথ চক্রবর্তী
বিকাশ যশ
সঞ্জীব কুমার ঘোষ
মৌসুমী চক্রবর্তী
চায়না খাতুন
মিলন মাঝি
রমা মহান্তি
শাশ্বতী চক্রবর্তী
অযান্ত্রিক(অনুপ রায়)
তপনকান্তি মুখার্জি
প্রবণ পালন চট্টোপাধ্যায় ​
অরিজিৎ বাগচী
পিয়াংকী
কৌশিক চক্রবর্ত্তী


ভিডিও

প্রণব নস্কর
গৌতম চক্রবর্তী
পাপড়ি বোস
সুলগ্না মিত্র
কাকলি ভট্টাচার্য্য

পাপ আর পুন‍্য

সেতো চলে পাশেপাশে,

পাপের বোঝা কাঁধে দেখে

পুন‍্য বেজায় হাসে।।

পুন‍্য যেটা মনে করে

পাপ যে করে আসে,

পাপ আর পুন‍্যের খেলা

সেতো চলে বারোমাসে।।

পুন‍্য ভেবে খাবি যেটা

ধংস করে কাকে,

কষ্টে যে তার প্রান গিয়েছে

কে তার খবর রাখে ?

পিঁপড়ের দল প্রসাদ চাটে

আরশোলা টিকটিকি,

বিষ লাগাবি তারই তরে

পাপ থাকেকি বাকি ?

মুরগি পাঁঠার ছটফটানি

রাখিস কি আর মনে,

খেয়ে খাইয়ে তৃপ্তিলাভে

পাপ পুন‍্যর সনে ।।

দৃষ্টি আর মনের ভাষায়

কতই কিনা করিস,

দেহের জন‍্য পুন‍্য করতে

পাপই তো করে মরিস।।

ঘরছেরে তুই পুন‍্য করতে

আসিস মন্দিরেতে,

সেই খরচে পুন‍্য কর্মে

কেওতো পেতো খেতে।।

আষ্টেপৃষ্ঠে সব লুটে খাস

যেই না সুজোগ পাবি,

কার পাপেতে পুন‍্য হল

সেই কথাটি ভাবি।।

পাপপুন‍্য আপেক্ষিক হয়

সেই কথাটা মানিস,

পাপপুন‍্য যথায় তথায়

হবেই সেটা জানিস।।

পুন‍্যে যারা বাহবা পায়

পাপ থাকে তার পিছে,

পাপপুন‍্যের খবরদারির

দম্ভটাই তো মিছে।।

মাথা নীচু করে সবকিছু মেনে নাও তুমি,

মাথা উঁচু করে তাকাতে পারোনা কোনোদিন ।

তাবৎ মানুষ তুলনায় উচ্চতর ভেবে

নিজের উচ্চতার মাপ জানোনি কখনো ।

শূন্য থেকে জন্ম নেওয়া গভীর

শূন্যতা

তার সব বেদনাগুলি মেখেছো শরীরময়,

বহুদূরে ঘুম ঘুম নির্জন চরাচরে একা

সহিষ্ণুতা সাধনা করে শুধুই ভেবেছো তুমি

এভাবেই মোক্ষলাভ, এভাবেই আসে চিদাভাস ।

তোমার মতন মানুষ চিরকাল থাকে নমনীয়,

বিপদে বহুদূরে, নিরাপদ নিভৃতে নিরালায়

নরম মানুষজন ক্যান্ডেললাইট

ডিনার সাজায়,

অঢেল পানীয়…নামে রঙিন রাত্রি…ফিসফাস…

দূর্বল মানুষ সবল মেরুদন্ডের গল্প ভালোবাসে

ভেবে নাও এ-কাহিনী ঘুণধরা উপকথা

হয়তো রহস্য নির্মাণ হবে সন্ধ্যাঘনালে

তবুও পাগল এখানেই কবিতা লিখে যায়

কুয়াশার বৃন্তে খোঁজে বজ্রগর্ভ মেঘ…

নেশাটা জমে ওঠে, স্বপ্ন দেখা শুরু করো তুমি,

কাঙ্খিত নারীর দেহ নগ্ন করো

অবাক দর্পণে,

গর্ভবতী সময়ের জরায়ু থেকে তোমার ঔরসে

ভেবে যাও জন্ম নেবে স্বপ্নে দেখা তেজস্বী পুরুষ ।

সেই ছেলেটা ভীষণ কড়া ঘরের দরজা বন্ধ

বাইরে তখন রঙের আগুন ফাগুন দিনের গন্ধ ।

কঠিন ছেলে একলা ঘরে খুলবে না তো খিল

মাখবে না তো আর কখনো আবিরও একতিল ।

কারো কথাই শুনবে না আজ গৃহতে বন্দি

কেউ জানে না এর পিছনে কী অভিসন্ধি ।

কেউ না জানুক সে তো জানে রঙ রয়েছে মনে

সেই নেশাতে পাগল যতই থাকুক ঘরের কোণে ।

রঙ ছাড়াও দারুণ রঙিন নিজেকে তার লাগে

সেই মেয়েটা রঙ দিয়েছে কত বছর আগে ।

সে রঙ আছে মর্মে লেগে এমনই অক্ষত

বরং আরো খুলছে এখন দিন যাচ্ছে যত ।

ও মেয়ে তুই কোথায় আছিস কোন সে অমর্ত্যে

প্রৌঢ় ছেলে ভাসছে আজো রঙিন আবর্তে ।।

নীল তিমি থেকে অতি ক্ষুদ্র পিপিলিকা

ভাইরাস ব্যাক্টিরিয়া,অদৃশ্য জীবাণু,

জীব-জড়ের মধ্যবর্তী প্রাণকণিকা

শক্তি স্রোতে গতিশীল অণু-পরমাণু।

সর্বত্র প্রাণস্পন্দন,জীবন আভাস,

জন্ম জীবন যাপন,প্রতিনিধি রাখা;

সর্বত্র শক্তি ধারার বিচিত্র প্রকাশ,

জীবনের পরিণতি মরণকে ডাকা।

এ ব্রহ্মাণ্ড-প্রকৃতিতে মানুষ নগণ্য,

সীমিত জীবন কাল মহাকাল মাঝে;

তার খ্যাতি পৃথিবীতে মননের জন্য

মহাকাশে তারা-গ্রহে তা লাগে না কাজে।

এ জগত প্রকৃতিতে এই হল সত্য,

সব নশ্বর অনিত্য,শক্তি শুধু নিত্য।

বনফুলের  মাঝে  তুমি 

         প্রকাশ হলে  স্বয়ং 

        সমাজ জীবন  পল্লীকথায় 

        তোমার  গভীর  মনন। 

        পথের  পাঁচালী, অশনি সংকেত,

        ইছামতীর মাঝে,

        অপরাজিত  আজও  তুমি 

        জাগ্রত  ইতিহাসে। 

        

         গ্রাম বাংলার  রেলপথটা 

         মাঠ  ছুঁয়েছে যেথায়,

         ধানের  ক্ষেতে অপুদুর্গা 

         এক ছুট্টে সেথায়।

        হাতছানি  দেয়  চাঁদের  পাহাড় 

        সব  ছোটোদের মাঝে, 

        রোমাঞ্চ  আর  রহস্য ভরা 

        পথের  বাঁকের খাঁজে ।

        তোমার  লেখনী  স্বপ্ন বেদনা 

        অভিমান  ভরা  মন 

        বাংলায়  তুমি চির স্মরণীয়,

        বরণীয় তুমি সবার  প্রণম্যজন।

        চব্বিশ  পরগনা থেকে কত  দূরে 

        ঘাটশিলা  এলে  শেষে, 

        গৌরী কুঞ্জে  আশ্রয়  নিলে 

        স্মৃতিভরা  দিন শেষে। 

        সুবর্ণরেখা নদীর  তীরে 

        তোমার  সমাধি  মাঝে, 

        অশ্রু সজল  দুটি  নয়নে

        তোমাকে  হৃদয়  খোঁজে।।

আমি তৃষিত ফুলের বুকে আনি

       মাথা তুলে বাঁচবার আশা

আমি মূক বৃক্ষের মুখে দিই

     জীবনে লুকিয়ে থাকা ভাষা।

আমি ভেসে চলি আপন খেয়ালে

ভেলা ক’রে সুজন বাতাস

অসীম সাগরবুকে জনম আমার

     বাসস্থান সুনীল আকাশ।

  

নিদাঘের দাবদাহে পীড়িতের মুখে                

           আমি আনি অনাবিল হাসি

কখনও সোনার ফসলে

        ঢালি শিলা রাশি রাশি।

বন্যায় ভাসাই আমি মাঠঘাট খেত

      সুরম্য নগর,

আবার বন্ধ্যাভূমিকে করি

      চাষযোগ্য অতি উর্বর।

আমার লাগেনা ভিসা যেথা খুশি যাই 

ঘুরি আমি দেশ-দেশান্তর

শান্তিজল ঢালি আমি সকলের শিরে

বেঁচে থাকি যুগ-যুগান্তর।

বিরহী যক্ষের ব্যথা শোনাই প্রিয়াকে

দূত হয়ে যাই অলকায়

প্রিয়ার কথা শুনে আমিও পেলাম ব্যথা

ভাবি, কীভাবে ওদের মেলাই।

সাগরে জনম আমার সূর্যের তাপে

   সাগরেই হ’ব তো বিলীন

রূপান্তরের আগে তোমাদের মুখে

যেন দেখি হাসি অমলিন।

শরৎ মানে কাশের বন

শরৎ মানে আলো

শরৎ মানে সুখের পরশ

সাজ সজ্জায় ভালো।

শরৎ মানে শিউলি গোলাপ

হাজার ফুলের মেলা

শরৎ মানে মেঘলা আকাশ

রোদ বৃষ্টির খেলা।

শরৎ মানে শান্ত হাওয়া

আগমনির গান

শরৎ মানে এক ফালি চাঁদ

জোয়ার -ভাঁটার টান।

শরৎ মানে ভোরের শিশির

ঢাকের বাদ্যি শোনা

শরৎ মানে পুজোর আমেজ

সুখের সেদিন গোনা।

শরৎ মানে পাওনা-দেনা

সাজিয়ে রাখি যতো

শরৎ মানে ইচ্ছে -ডানা

স্বপ্ন শত শত ।

শরৎ মানে – ভালোবাসা

এক সাথে পথচলা

শরৎ মানে লুকিয়ে রাখা

মনের কথা বলা।

শরৎ মানে সবুজ – ধরা

শাল-পিয়ালের বন

শরৎ মানে বৃষ্টি ভেজা

অবুঝ দুটি মন।

উদ্বেগের তো শেষ নেই আজ আর

বিশ্বজুড়ে চলছে মহামারী।

অনুজীবকে দোষ দিয়ে কি লাভ !

মানব পরিবেশ করছে কারা ভারী ?

সন্ত্রাস নামক মহামারীটা আজ

জেঁকে বসেছে সারা বিশ্বজুড়ে ।

লোভ নামক মহামারী টাও

মানবতাকে খাচ্ছে কুরে কুরে ।।

হুমকি নামক মহামারী টা আজ

 কিছু মানুষের হয়েছে মজ্জাগত ।

শোষণ নামক মহামারীটাও

 গরীব কে করছে ক্ষতবিক্ষত ।।

শ্রেষ্ঠত্ব নামক মহামারী টা আজ

 প্রকৃতিকে দেখায় শুধুই ক্ষমতা ।

শাসন নামক মহামারী টাও

কেড়ে নিচ্ছে মানবিক স্বাধীনতা ।।

ক্ষুধা নামক মহামারীটা আজ

 কিছু মানুষের শুধুই চাপা কান্না ।

লালসা নামক মহামারীটাও

 সমাজে আজ ঘটিয়ে চলেছে বন্যা ।।

ধর্ম নামক মহামারীটা আজ

 মানুষে মানুষে করছে ভেদাভেদ ।

হিংসা নামক মহামারী টাও

মনুষ্যত্বের করছে ব্যবচ্ছেদ ।।

জ্ঞানহীন নামক মহামারী টাকে আজ

অনিচ্ছাতেও প্রকৃতি করছে ধারণ ।

কর্মহীন নামক মহামারী টাও

 বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের আজ কারণ ।।

পরিসংখ্যানের খাতায় তুলনা করে দেখো

প্রকৃতির মহামারীর বলি যত প্রাণ,

লক্ষ গুণ বেশি মানব মহামারী থেকে

 কিভাবে বিশ্ব পাবে পরিত্রাণ !

টিকা করণে প্রকৃতির মহামারীর

 হবেই যেন ঠিক পরাজয় ।

শুভ চিন্তার মানুষেরা এক হও

বিশ্বমানবতার হোক শুভ জয় ।।

শিখছি ..শিখছি ..শিখেই চলছি শেলেট শিশুপাঠ

রঙসাগরের স্লেটগুলো সব তেপান্তরের মাঠ

হাঁটতে হাঁটতে জীবনপথে ..কোন্ শহরের মোড়ে

উথালপাথাল স্বপ্ন যত …মুঠোয় নিলাম পুরে

হরেক মানুষ , হরেক জীবন ,  অনেকরকম বাঁচা

লোহার শিকল ঠুকছে পাখি , ভাঙছে ভয়ের খাঁচা

শিখছি এখন গাছের কাছে লড়াই করে টেকা

শিখব শিশুর অমল খুশি  ..নিজের চোখে আঁকা

শিক্ষা পূরণ ..শিক্ষা বাকি ..আলোয় অন্ধকার

আত্মজাকে সঁপে দেবো সেই স্বপ্নের অধিকার

একা একা হাঁটছি পথে একাদশী জ্যেৎস্না মেখে

হুবহু একটা কিশোরী আশার আলোর ভোর,

দেখি দূর শ্মশানে জ্বলছে চিতা

কে হারালো, কার বা বধূ।

কে যেন দাঁড়িয়ে আছে এলোকেশে

ছুটে গিয়ে দেখছি চেয়ে আমার বৃক্ষমাতা।

শুরু হলো আবার যাত্রা

কেউ কাছে নেই তুইও তো নেই

বেশ তো আমার পাশেই ছিলিস,

আজ কি যে তোর ধরল মরন

 আমার থেকে অনেক দূরে গেলি চলে।

বেশ করেছিস ,

না হয় আমার চলার পথে

আলপনা আঁকা সেই চুমোতে

আকাশ ছোঁয়া তৃপ্তি বুকে

হাঁটছে তোর পাগলা ভোলা তোর আশাতে।

ওরে খেপি তুই যেখানে আছিস শুয়ে

যাচ্ছি সেথা জ্যেৎস্না ছুঁয়ে,

সাবধানে থাক তোর মতো ঐ ভোর কিশোরী

আলো – ছায়ায় পথ দেখিয়ে যাচ্ছে নিয়ে।

  পৌঁছে যাবো ঠিক সেখানে

  দেখবো চেয়ে আমার খেপি

  দাঁড়িয়ে আছে জ্যেৎস্না মেখে নতুন এক ভোরে।

যে যন্ত্রণা বুকে নিয়ে তাকে “তুমি” বলে ডাকি ,

সে যন্ত্রণা আজও আমায় করছে যাপন !

যে ইচ্ছা গুলো মরুঝড়ের বুকে দিয়েছি উড়িয়ে-

সে স্বপ্ন চোরাবালির মাঝে করছে হাঁসফাঁস-

শুধু “তাকে” বুঝে নিতে ।

শরীরের গায়ে শরীর মেখে কি সুখ দিয়েছে ধরা !

সাজানো ড্রেসিং টেবিল , ফুলের টব ,দামি শাড়ি ,

সোনার কানের দুল , হীরের আংটি …

স্বজত্নে পরা “তার” নামের সিঁথির সিঁদুর কপালের টিপ …

ফেলে আসা স্মৃতি শুধু নোনা জল !

আমি তাকে “তুমি”বলে ডাকি , তুই তো শুধুই ভাবনা !

অনেক না বলা কথা তুই থেকে তুই তেই …

আজও আছিস তাই …তুই যা ছিলিস আগে-

ফুচকা চটপটি আর না বলতে পারা কবিতার সাথে ।

এখনো লিখি কবিতা , এখনো করি গান …

লিখি কতকিছু লিখি শতশত নাম !

মনের গভীরে রয়েছে যে “তুই” গাঁথা

কোনো কবিতায় হয়নি তা লেখা …

মৃদু হাসির আড়ালে,

যে যন্ত্রণা বুকে নিয়ে তাকে “তুমি” বলে ডাকি !

                …শুধু তোকে !”তুমি” বলা হলো না ॥

তোর মিথ্যে গুলোকে এক গন্ডুষে পান করেছিলাম আমি।

বুঝিনি সেদিন, আমি ছিলাম তোর ক্ষণিকের প্রয়োজন।

বলেছিলি,আমি তোর প্রিয়জন!!

সত্যি কি প্রিয়জন!? নাকি স্বার্থের প্রয়োজন।

প্রিয়জন কি কখনো প্রয়োজন হয়?

আর যে শুধু প্রয়োজন,সে কি কখনো প্রিয়জন হয়ে উঠতে পারে!?

প্রয়োজন শেষে তোর কাছে আমি শূন্য।

বড়ো ভুল ভাবে ওরা,বড়ো ভুল বলে ওরা,আমি নাকি তোর প্রিয়জন!!

প্রিয়জন তো তার কাছেই হয়ে ওঠা যায়,প্রয়োজন শেষেও যে আগলে রাখে,ভুলে যায় না।

সকলের কাছে প্রয়োজন হয়ে ওঠা খুব সহজ,প্রিয়জন হয়ে থাকাটা খুব কঠিন।

প্রয়োজন সময়ের সাথে সাথে বদলে যায়।

সত্যিকারের প্রিয়জন কি কখনো বদলে যায়!?

একদিন হাত ধরে অনেকটা পথ হেঁটেছি দুজনায়,আজ প্রয়োজন শেষে হাতের বাঁধনটা আলগা করে দিয়েছিস।

মিথ্যে ব্যস্ততায় ডুবিয়ে দিয়েছিস নিজেকে।

প্রিয়জনের কাছে সময় চাইতে হয়না,সে সময় দেবার জন্য প্রস্তুত থাকে।প্রিয়জনের প্রয়োজনটাই তার কাছে প্রাধান্য পায়।

অনেকটা বদলে গেছিস তুই!একথাই বা বলি কি করে।

আমার তোকে চিনতে ভুল।

তোর কাছে প্রয়োজন হিসেবে থেকে,শূন্য হিসেবে থেকে,নিজেকে তোর কাছে আর নিজেকে নিজের কাছে ঠকানোর চাইতে একা থাকা ভালো।

প্রিয়জন হয়ে থাকিস না হয় তুই শুধু আমার হৃদয় মন্দিরে।

স্বার্থ ভুলে হাজার প্রয়োজনের ভিড়ে খুঁজে নিস তোর প্রিয়জনকে।যে হবে শুধু তোর সত্যিকারের প্রিয়জন।

মাটিতে দাঁড়িয়ে মেঘ ছোঁবার স্বপ্ন,
ছুটে যাওয়া শুধু মেঘের টানে,
একটা করে কোলাপসিবল গেট খোলা,
আর সিঁড়ি দিয়ে ওঠা, উচ্চ শিখরে,
এবার শুধুই আমোদ প্রমোদ জীবন।
সিঁড়ি ভাঙতে -ভাঙতে আজ বড়ই ক্লান্ত,
জীবনের সিঁড়ি ভাঙার অংকে বড়োই কাঁচা।
সুখ-স্বাচ্ছন্দ শুধুই গোঁজামিলের
আজ্ও মেঘ অধরা, এই সাপ লুডো খেলায়,
জীবন আজ একা নিঃসঙ্গ! চারদিক শুধুই
অন্ধকার! আর অন্ধকার,!
আকাশের মেঘ ছোঁবার নেশায়
জীবনটাই আজ কালো মেঘ।

কোনো দিব্য দৃষ্টি লাগে নি বুঝে নিতে,
বিকেলের কথা, দিনের সমাপ্তি।
সময়ে ফিরে গেছে রত্নের সন্ধানে,নোনা গন্ধের শরীরে,
রত্ন পায়নি, পেয়েছে শুধু বুক জুড়ে রক্তিম অন্ধকার।
এক লপতে বিন্দু বিন্দু নোনা ঘামের মতো জেগে আছে প্রাণে।
অতৃপ্তি, সেটা বুঝতে কোনো দিব্য দৃষ্টি লাগেনি।

বুকের কানাচ, অথবা ক্লান্ত আঁচল থেকে ভেসে আসছে
বৌদ্ধ বিহাররে আরতির ধ্বনি ,মনে হয় বিষাদের সুর,
ঝুলে পরা দুই কাঁধে যৌবনের দৃপ্ত অহঙ্কার।অথচ কিসের ?
জানা হয়নি এখনো

তৃপ্তির বোধ বড় অলীক,আধবোজা দুই চোখ নীল
নেশাতুর হৃদয় মেঠোবাউলের মতো তৃপ্তিহীন,
সে কি বুঝবে ?পড়ন্ত যৌবনের হলদেটে আলোয়
শরীর খুঁজে ফেরে বিরহের ভাষা,
বেশি তো নয় ,সামান্য সবুজ স্বপ্নের মধ্যে
সে চেয়েছিলো শুধে দিতে হৃদয়ের ঋণ।

ঝুলে পড়া এলোখোপা,হালকা কাঁধ জুড়ে,
ঝরে পরা কয়েকটা কালো চুলের মাঝে ক্লান্তি থাকে মিশে ;
হিসাবের খাতা নিয়ে সময় দাঁড়ায় এসে তার কাছে,
গুনে যায় কপালে বলিরেখা ,চোখের তলায় দাগ
ফেলে আসা জীবনের সুদ ,লাভ, ক্ষতি
লাল আচিলের দাগে চিহ্নিত করে দিয়ে অতৃপ্তি।
দেখালে সমস্ত স্মৃতিরঋণ জমা
নীল মলাটের খাতায়, ঘুমন্ত, পরিশ্রান্ত।

রক্তে তেজ নেই, শরীর জুড়ে ভাটার শান্ত সাগর অতল,
কপাল জুড়ে জোয়ারের জলের ফিরে যাওয়ার দাগ,
দুহাতে হালকা ফুটে ওঠা শিরে খেলা করে যায় শুন্যতা,
দুগাল জুড়ে শুকনো অশ্রুজল।
গলার কাছে অজানা ভয়ের পায়ের শব্দ,
বিরোহী রাত একলা থাকে জেগে।

সামনে যাদের দেখা যায়, সবার মুখেই
কৃত্রিম যৌবনের সঞ্চয়,বিকেলে আলোর সমাপনীসুরে,
সব তোড়জোড় ঢাকা পড়ে যায়,
তৃপ্তি ? মনে হয় যেন তাত্ত্বিক অঙ্গীকার।
নিরপেক্ষতা হয়ে যায়,
শুধু ভুল আভিধানিক শব্দ।
একদিন সবাই সবুজ বলে ডাকতো,
সবুজ ছিল নীল ছিলো লাল ছিলো যৌবনে,
আজ শুধু হলুদের ছোপ ধরা সংসার।
কোনো দিব্য দৃষ্টি লাগে নি বুঝে নিতে,
বিকেলের কথা, দিনের সমাপ্তি।
অতৃপ্তি, সেটা বুঝতে কোনো দিব্য দৃষ্টি লাগেনি।

কিছুদিন ধরেই কালো মেঘ ঘুরছিল আকাশে ।
তারপর ঝড় উঠলো , বৃষ্টি নামলো ,
জল বাড়লো , বাঁধ ভাঙলো ,
বাড়ির চাল উড়লো , গাছ পড়লো ,
মানুষ হলো গৃহহারা ।
রাজমুখ চকচকে সরকারি ত্রাণে ।
ঘর ভরছে , পকেট ভরতি হচ্ছে ।
কারো কারো ঘরে আলো জ্বালাতে
একমুঠো অন্ধকারের বড়ো দরকার পড়ে ।

ঝড়ের মধ্যে ডানার আন্দোলনে
তুমি উড়ানের কবিতা লেখ —-
#
অভিমানী বিকেল তোমাকেই খোঁজে
কালো রাত জুড়ে তারা খসা
সান্ধ্যভাষায় তুমি শ্লোক আওড়াও।
#
আজ প্লাবনে, কেউ ভালো নেই —
গলুইয়ে তুমি বড্ড একা
সামলে রাখো তরণী ,
পাটাতনের নীচে সযত্নে রক্ষিত আছে
আমাদের সমস্ত কবিতা।

নিদ্রা থেকে নদী হয়ে
বয়ে গেছে অনন্ত প্রিয়মুখ ।

তোমাকে যে স্বপ্নের কথা বলেছিলাম ,
ওরা এখন পাহাড়ের পশ্চিম ঢালে
খাদের ভেতর গড়ে তুলেছে একান্নবর্তী পরিবার ,

বিধাতা ও ইঁদুর মারার বিষ সব এক।

সূর্য ডুবে গেলে পড়ে থাকা নিস্তৃণ মাঠ ও
বিকেলের সাথে নেমে আসা কুয়াশারা জানে

এই যে আমি অন্ধকার দেখলে
হি হি করে হাসি
চিৎকার করি
লাফাই
এ কোনো পাগলামো নয় ,

আসলে চাঁদের কারখানায় অন্ধকার ও
আমার মতোই একা,

তাই শিরা কালোর ছোঁয়া পেলে
একটু খরস্রোতা হয়ে যাই এই যা

আজকাল ট্রেনের কামরায় উঠে দাঁড়িয়ে থাকি। 

সিটগুলো পাশে পড়ে থাকে। ওরা বোবা। তাই ইশারা করে ডাকে। 

পাথরের গায়ে একফোঁটা জল ছিঁটিয়ে সরে যাই

তবু বসি না। বসলে একটা নির্দিষ্ট সময় পর উঠতে হয়। 

তারপর লাইনে দাঁড়াতে হয়।

অথচ সেই অর্থে দেখতে গেলে আমার কোনো তাড়া নেই 

প্রজাপতির মতো তো আমার গায়ে কোনো আলোও আঁকা নেই


বাতিল কামরায় সিট কমে যাচ্ছে ক্রমশ 

ভর্তুকি দিয়ে আশ্রয় কিনতে হয়  এখন 

আমার কোনো রোজগার নেই। আমার কাছে শুধু কয়েকটা ব্যস্ত কামরা আছে


তাই ভয় পাই। খুব ভয় পাই।সিঁটিয়ে থাকি। 

একবার বসলে যদি না উঠতে পারি।

আরো একশটা ভেঙে ফেলা জঙ্ঘার পিছনে
এখনো তাকিয়ে দেখছি পুরনো আঠারোটা দিন-
কত ধনুকের ছিলায় জড়িয়ে আড়ষ্ট ইন্দ্রপ্রস্থ 
সঙ্গে ভিড় করা অসংখ্য কৌতুহলী চোখ-
আমার দুপাশে প্রলুব্ধ জাহাজের গতি 
হয়ত নিজেকে নোঙর বানিয়ে ফেলা একরত্তি ঝলমলে হস্তিনাপুর-
এই নিয়ে ছুটে চলার দিন পেরিয়ে এসেছি ক্রমে
এখন ভাইয়ের জঙ্ঘা কুড়িয়ে তুলে রেখেছি রথের চাকায়
যেটুকু দাঁড়াবার জায়গা আগাগোড়া খালি থাকবার কথা
তাও আজ নেই-
আমি দাঁড়িয়েছি বারান্দায়
এই সেই বারান্দা যেখানে দ্রৌপদীর জন্য রাখা ছিল বস্ত্রহরণের প্রামাণ্য নথি…
এই সেই চাতাল যেখানে অন্ধকারের পাশে তোলা ছিল একশটি ধর্মবীজ…
আজ ইন্দ্রপ্রস্থের সভাগায়িকাদের ছুটি নেবার পালা
যারা এখনো থেকে যেতে চায় প্রবল খিদের তাগিদে
তারা নিজেদের নামে ঘোষণা করেছে রাজসম্মান-
এযাবৎ আঠারোটা দিন আমার চেনা
বিগত সমস্ত জন্ম থেকে আমি বেছে রেখেছিলাম এমন আঠারোটা স্বপ্নের কঙ্কাল
একএকটি বীজ থেকে স্বভাবতই জন্ম নিয়েছিল আরো অক্ষৌহিণী নারায়ণী সেনা-
আসলে নারায়ণী সেনার জন্য আমার অপেক্ষারাও দুমড়ে ছিল প্রতিদিন
আজ নারায়ণের দুহাতে রাজসঙ্কট তুলে দিয়ে
আপাতত কুড়িয়ে তুলছি আরো আঠারোটি নির্লজ্জ সমঝোতা-
জলবায়ু পরিবর্তনের মতো,, 
        বন্ধুত্ব এক এক রূপে 
              ধরা দিয়ে যায়।
 বন্ধুত্বের  বাস্তুতন্ত্রে এখন শুধুই
       খাদ্য-খাদক এর সম্পর্ক,,,,,,,, 
 মাংসাশী পশুর  মতো খুবলে খায় 
পবিত্র মনের বাঁধন গুলো।
 বন্ধু শব্দটি অতীতের স্মৃতি নিয়ে
 এখন স্থান পেয়েছে মিউজিয়ামে।
 বন্ধুত্ব যেন লুপ্ত প্রজাতির প্রাণীর মতো,,
আর, দেখা মেলে না তার,,,,
তবু,, কিছু মেকি মুখোশে ঢাকা বন্ধুত্ব
 ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছে
 ঠোঁটের কোনে, আবছা হাসির আড়ালে।
 আবহাওয়া পরিবর্তনের মতো বন্ধুত্বও আসে যায়,,
 প্রতিদিন নতুন নতুন সংখ্যা যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ —
 অবিশ্বাস, হিংস্রতা, স্বার্থপরতা ফুটে ওঠে
 বন্ধুত্বের সংজ্ঞায়।
বন্ধুত্ব আজ হেরিটেজ বিল্ডিং এর মত  
কেঁদে চলেছে।
 শেওলা আর আগাছার জঞ্জালে ভরা,,
 বিভৎস স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ,,, 
 দিনের আলো আর 
রাতের জ্যোৎস্না যেখানে পথ হারায়,, 
 নির্জনতায় একাকীত্বে ধুঁকে ধুঁকে
 শুধু ধ্বংসের অপেক্ষা।
 তবু কিছু বন্ধুত্ব 
জীবাশ্মের ছাপ রেখে যায় চলার পথে।
নাচছে ভূতের মাসি পিসি
বাড়িয়ে সরু ঠ্যাং
ঘ্যাঙ্গর ঘ্যাঙ্গর গান শুনিয়ে
নাচছে কোলাব্যাঙ।
নাচছে বুড়ো নাচছে বুড়ি
নাচছে ছেলের দল
পেতনি গুলোর নেই চামড়া
নেই কো দেহের বল।
ভূতের দেশে সবাই রাজা
নেই কো দলাদলি
মেছো ভূত আর গেছো ভূতে 
করছে কোলাকুলি।
নাচছে জোয়ান নেই পালোয়ান
গো-ভূতেদের ছানা
কোথায় ওদের ঠাঁই-ঠিকনা
যায় না কিছুই জানা।
কোথায় সে দেশ ভূত-ভূতুড়ের
কেউ দেখেনি চোখে
বেঁকিয়ে কোমর পা-দুলিয়ে
নাচছে নেশার ঝোঁকে।
ছোট্ট খুকু বলছে এখন
ভূতের বাড়ি যাব
মণ্ডা মিঠাই রসগোল্লা 
অনেক খেতে পাব।
লাগে না ট্যাক্স ভূতের দেশে
যতই তুমি খাও
ভূতের মতোই একটু কেবল
নাচ দেখিয়ে যাও।
গভীর খাদের কিনারে আজ আমরা ।
পতন অনিবার্য জেনেও–
সরে আসতে চাইছে না কেউ।
 পেশি শক্তির আস্ফালনে
কায়েম করতে চায় ধর্মীয় আধিপত্য।
প্রতিনিয়ত মানবিক আবেগ অনুভূতির
অপমৃত্যু ঘটে পৈশাচিক হিংস্রতায়।
        
ধর্মের আগে তো মানুষ––
এই চরম সত্যটাই যায় ভুলে।
পৈশাচিক উল্লাসের কাছে,
জাগ্রত বিবেকও মাথা নত করে 
কখনো সখনো।
       
কান পাতলেই শোনা যায় শ্মশান, গোরস্থানে
স্বজনহারা মানুষের আকুল ক্রন্দন। 
ধর্মের ধ্বজাধারীর বেহেস্ত কামনার
নিধন যজ্ঞে মানুষেরে দেয় আহুতি।
আত্মজের জন্য চিতা সাজিয়ে
অপেক্ষা করে আজকের হরিশ্চন্দ্র।
       
দাম্ভিকতার অহংকারে ভুলে যাই
নিজের সীমাবদ্ধতা।
পড়ন্ত গোধূলির শেষ রশ্মি পাতে
চাওয়া পাওয়ার জীবন তরীতে
হিসাব মিলাতে গিয়ে দেখে ,
শেষের দিনে বরাদ্দ সেই–
সাড়ে তিন হাত মাটি।
রাখবো লিখে       মায়ের কথা 
স্নেহের সে যে       দিনের কথা
               আদর মাখা কদর ভরা দিন,,,,,,, 
 রাখবো লিখে      স্মৃতির কথা
স্বপ্ন ছড়া—           ছড়ির কথা 
              মধুর কত আতুর শত ঋণ।
রাখবো লিখে       সোহাগ কথা
 শাসন-বারণ        মানার কথা 
              রুক্ষ মনের দুঃখ যত ভুলে,,,,,,,,, 
রাখবো লিখে      বোধের কথা 
আগলে রাখা—   রাখির কথা 
             গন্ধে ভরা মায়ের এলো চুলে।
রাখবো লিখে       স্নেহের কথা 
জ্বরের রাতে        জাগার কথা 
            কষ্ট দিনের স্পষ্ট কতো মায়া,,,,,,,,
রাখবো লিখে       দরদ কথা
 নাইয়ে খাইয়ে     দেয়ার কথা 
            আঁচল ভরা সচল আলো ছায়া।
রাখবো লিখে       ভক্তি কথা
 তুলসী তলায়      পূজার কথা
             আলতা পরা টুকটুকে মার মুখ,,,,,,, 
 রাখবো লিখে      ব্রতের কথা 
ভালোবাসা—       বাসির কথা 
            এ যৌবনের প্রথম প্রেমের সুখ।
রাখবো লিখে       দুধের কথা
 অমৃত সেই          পানের কথা 
             সুক্ষ্ম স্মৃতির রুক্ষ দেয়াল ভাঙা,,,,,,, 
 শূন্য বুকে            হন্য পাখি
 ধরায় আবেশ     জড়ায় আঁখি 
             ফাঁকির ঘরে রাখির আবির রাঙা।
লিখতে গিয়ে        অশ্রু ঝরে 
লাইনরা বে—       লাইন ধরে 
             কেমন করে তোমার কথা বলি,,,,,,,, 
 আজও আছি      তোমার খোকা
হদ্দ-হাঁদা               বধ্য বোকা 
            বাতলে দেওয়া তোমার পথেই চলি।
নারীদের অধিকার চিৎকারে নয় আর
প্রতিবাদ মোমবাতি জ্বালিয়ে
ভুখা পেটে ধর্না; কি হবে?
মনুষ্যত্ব গেছে ওগো হারিয়ে।
যে দেশে নির্ভয়া মণীষারা অকালে
 ধর্ষকের ছায়া ঘরে প্রতিদিন পুরছে !
সভ্যতার জাগরণ বুকে নিয়ে
জন দরদীয়ারা মুখোশে ঘুরছে।
এ দেশের মা বোন তোমারই
সম্ভাষণ ছিল বুঝি দেখাতে?
ক্ষনিকের স্বার্থে  এতো লোভ?
নারীদের অধিকার মিথ্যে?
ওগো শৌর্য বীর্যের পুরুষেরা
নারীরা কি বন্ধকী ভোগ্যের?
পুরুষত্ব যে কজনের আছে বেঁচে
জেগে ওঠো দোষ নয় ভাগ্যের।
নারী দিবসে নারীদের অধিকার 
 গর্বিত রাজা এ দেশের প্রশাসন
রাজপথ কখনও বা গলি ক্ষেতে
নারী স্বাধীনতা‌ আজ গণ ধর্ষণ!
 গৃধ্রদের নিধনে নারী আজ
হাতে পায়ে ধরো সব অস্ত্র
নীচতার গলা কেটে খান খান
শেষ করো ধর্ষকের পৌরষত্ব।
সময় এমনই
সে কাউকে কাউকে রাজা বানায়
আবার এই সময় ই
দুঃসময় হয়ে
পায়ের নিচের থেকে মাটি সরিয়ে দেয়
একটা শিশুর বুকে যে খুন
তার গাঢ়তা কম নয়
তোমার হাতে পতপত করে ওরা
পতাকার থেকেও ঘন।
সে পৃথিবীতে আসে
সময় তাকে নিয়ে আসে
মাটিতে পা রেখে
চুমু খেতে চায় আকাশে
নীল আকাশে হাসি চাঁদ তারা
ঘুম থেকে জেগে ওঠে পাখি
সবুজ অরণ্যে রঙিন ফুল পাতা
উথাল পাতাল বাঁচার উৎসবে।
পাহাড়ের মতো অন্ধকার সরে যায়
জাগে মানুষ অনেক অনেক মানুষ।
মানুষ আত্মশুদ্ধতায় সম্মৃদ্ধ হলে
চেতনা সুর আনে
অদ্ভুত সুন্দর পৃথিবী আরও সুন্দর হয়
ফিরে আসে বাঁচার উৎসব।
জীবন চলিতে করেছি
যত পাপ,
মাথার উপর আছে
যত অভিশাপ।
ভয় হয় যদি ফলে
অভিশাপ কিছু,
সদা থাকি ভয়ে ভয়ে
ছাড়ে নাকো পিছু।
গৃহীনীর কথা মত
কাছে আসে শালা,
 ত্রিকালদর্শী গুরু
সে তার চেলা।
এসে বলে গুরুদেব
সদা আছে সনে,
আশীর্বাদে হয়েছি উঁচু
অর্থে সম্মানে।
লোভে পড়ি তার সনে
চলি গুরু কাছে,
বাকি আছে যতটুকু
যদি কিছু বাঁচে।
সিংহাসনে বসে গুরু
গেরুয়া বসন,
শিষ‍্যদের মন্ত্র যেন
শুনি ভনভন।
চোখ বুঝে গুরুদেব
বিড়বিড় করে,
করবেন প্রসাদ গুরু
স্ত্রোতমের পরে।
আঙুল চাটিয়া গুরু
করেন প্রসাদ,
মাখামাখি দাড়ি গোঁফ
কিছু নেই বাদ।
ফেলে রাখা অবশিষ্ট
ভক্তরা বাঁটে,
অতি ভক্ত কিছু আছে
তারা থালা চাটে।
কখন বলবেন কথা
শিষ‍্যদের তরে,
ধ‍্যানে আছেন গুরুদেব
কথা হবে পরে।
সন্ধ্যায় গুরুর দেখা
বিধাতার রূপ,
স্তব্ধতা ভীষণ অতি
সবাই নিশ্চুপ।
ক্রমে গুরু চোখ মেলে
মৃদু হাসি মুখে,
মনে হয় সব দুঃখ
যাবে বুঝি চুকে।
কার কি জিঙ্গাসা আছে
এক শিষ‍্য কয়,
মন খুলে বল সবে
নাহি কর ভয়।
অর্থ আর মান ছাড়া
কিছু চাহিনা,
নাই বলে জুটিতেছে
সকলের ঘৃনা।
শিব চক্ষু করে গুরু
তথাস্তুর হাতে,
মনে বল পাইলাম
তেনার সাক্ষাতে।
সব কথা শুনে গিন্নী
আনন্দেতে নাচে,
আর বুঝি মাথানত
হইবেনা কারোকাছে।
পরদিন খুশি মন
ফুরফুরে মেজাজ,
অনেক দিন পরে শান্তি
পাইলাম আজ।
সংসারের ধর্ম সেতো
পাল্টায়না কিছু,
যত চাই ছাড়িতে
ছাড়েনাতো পিছু।
দিন যায় রাত যায়
মেটেনি তো আশা,
ভজন পূজনে দিন 
হল কর্মনাশা।
চিৎকার করে গিন্নী
ভেবে কিবা হবে,
থাক গুরু কাজ কর
ফল পাবে তবে।
কিন্তু গুরু বলেছিল
ভজে ফল পাবি,
নিশ্চয় ফলিবে তাহা
অন্তরে যা চাবি।
ভজন পূজন সেতো
থাকে এক দিকে,
সুখ যদি নাহি থাকে
সবই লাগে ফিকে।
শিষ‍্য ঘেরা গুরুদেব
নিজে ফল পায়,
বিপদে পড়িলে শিষ‍্য
ঈশ্বরেরে চায়।
আজো তবু মিলিলনা
গুরুর আশীষ,
মন বলে মিলিবেনা
বৃথা তা মাগিস।
কোথা গুরু কৃপা কর
আমি যে মরি,
করিয়ে ছলনা মোরে
হাসিছেন হরি।
মাতা পিতা শিক্ষক ছাড়া
কেহ গুরু নয়,
আর তিনি পরম গুরু
আছেন বিশ্বময়।
তিনি যাহা করিবেন
ভেক কিছু নয়,
ভেক দিয়া পাবিনাকো
তাঁর পরিচয়।
অন্তরে আছেন গুরু
তাকে থাক ধরে,
গুরুকে মিলাবে গুরু
নতুন সে ভোরে।
সংসারে লাগিবে না
গুরু পরিচয়,
নিজেরে করি গুরু
নিজে কর জয়।
বিছানার এই মরুর মাঝে সুতোর নদী বয়
আর যাই হোক  তার  নাম তো স্রোতস্বিনী নয়।
কাশ জমেনা তার কূলে কি ঘাস জাগেনা ভুলে,
সেথায় রাখি হৃদয়খানা খুলে–
সমস্ত রাত কসাইখানার গন্ধ ভেসে আসে
সুতোর মতো সুক্ষ্ম নদী মরুভুমির পাশে
আমার বাগান আচ্ছাদিত আগাছা জঞ্জালে 
মরুর বুকের কৃপণ বরষায়,
ফুলের পেলব কোমল কাব্য কথা
লিখব সেথা কোন দূর ভরসায়।
সমস্ত দিন সোঁদা গন্ধে ঝিম ধরা এই ঘর।
টিকে থাকার জন্য জেনো যথেষ্ট সুন্দর।
আমার হৃদয় রক্ত ছোটায় তোমার ধমনীতে
ভাববে লোকে মিথ্যে এ সব বাড়িয়ে বললাম
তুমি ভীষণ আনন্দ পাও মখমলি চুল ঘেঁটে, 
আমার নেশা চেটে দেখা তোমার গোঁফের ঘাম।
তোমার আমার স্বপ্নে বাঁচুক বেঁচে থাকার সখ,
আমরা দুজন দুজনকে চাই আপাদমস্তক। 
যা আছে আমার সত্য সত্য 
        বলতে চাই না মুখে ,
‘নাই’ ‘নাই’ করে কাঁদা ভালোবাসি 
        ভিখ্  চাই মোরা সুখে। 
মিলন যাচিয়া সাধনা করি না, 
        আবেগ বিছেদ তরে ;
হয়তো তাইতে জীবনটা জুড়ে 
        বিরহ বেদন ভরে। 
‘অর্জন’ লাগি করিনা যতন,
        কেবলই রোদন করি ;
   বেদন যাপন, শুষ্ক বদন 
         যাতন সুখেই মরি। 
হই নাই সাথী পথ চলিবারে ,
         সুখী হই পথ চাওয়াতে;
সুখের মিলন শখে ছেড়ে দিয়ে 
         কাঁদা ভালোবাসি হাওয়াতে। 
মনের চাওয়াকে চাপা দিয়ে করি 
          আত্মপ্রবঞ্চনা ,
দুঃখ যাপনে দক্ষ হলেগো
           হয় কি সুখের সূচনা ?!?

অনেকগুলো মুখ সামনে । সিগারেটের লাল আলোয় জ্বলছে , নিভছে , যেন টি.আই.প্যারেডে দাঁড়িয়ে সবাই । নির্দিষ্ট মুখটিকে খুঁজে চলেছি , পাচ্ছি না । একের পর এক পোড়া সিগারেট গুঁজে চলেছি পেটভর্তি অ্যাসট্রেতে । একদিকে আমি , অন্যদিকে রাত । একদিকে বিরহ , অন্যদিকে দুঃস্বপ্ন । পাহারায় অন্ধকার আর অভিমান । ভালোবাসার আর্তনাদ রডোডেনড্রনের হৃদয়ে । ছুঁয়ে আছি প্রেমহীন নিঃশব্দ । হে অসুস্থ সম্পর্ক , তুমি যাও । জীবনের ছাইপাঁশ খিল দিয়ে বসে থাকো ভাঙাচোরা হৃদয়ে। 

উদ্দেশ্যহীন হয়ে পড়ে থাকা সম্পর্কটা
নিশ্বাসের ভেতর কখন যেন স্থায়ীভাবে
একটা সরু রাস্তা করে নিয়েছে।

তারপর আরশিনগর থেকে পাঁজর মহল্লা পেরিয়ে
ক্রমাগত ধাক্কা মারতে থাকে নাভির তলদেশে ।

গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আসে ,
তবুও চেঁচিয়ে বলতে পারিনা
পৃথিবী ও পিথাগোরাস এক নয় ,
তুমি সেদিনও ভুল ছিলে বনলতা ।

এসবের মাঝেই পায়ে পায়ে পেরিয়ে যাই
জ্যোৎস্না ঢেউয়ের দেশ ।
বালুতটে আকাশের মতো ছড়িয়ে থাকে
মরা তারামাছের মন্ডল।

এক উৎসবহীন রাত ,
বেকসুর খালাস পায় খুনি সেজে বসে থাকা প্রেম।

শরীরে ইচ্ছের বদলে ইলিউশন জন্ম নিলে-
জলের বদলে অভ্যস্ত হয়ে পরি
উটের মতো ক্যাকটাস চিবিয়ে খেতে।

তারপর থেকেই আমৃত্যু ,
কবিতা প্রেমের বদলে প্রক্সি দিয়ে যাচ্ছে ।

কাল সারাদিন একটা মুঠোহাত ছুটেছে  আমার সাথে সাথে 
ট্রামে বাসে ট্রেনে এমনকি খালি পায়ের পিচের রাস্তাতেও 
বৃন্ত উপড়ে ফেলার আগে একটা আক্রমণ আসেই   
শক্তির পরীক্ষা হয় 
পেছনে তাকানো ওদের  বরাবরের অভ্যেস 
যুদ্ধের আগেই তাই আমি সেজে নিয়েছি রঙ তুলিতে 
অন্ধকার টাঙানো কোমর থেকে পা অবধি  
অথচ আদিকাল থেকেই সূক্ষ্মতায় সূর্যের অবাধ চলাচল 
আমি আঙুল ডুবিয়ে নিই ঠান্ডা জলে 
পুড়িয়ে ফেলি যাবতীয় অঙ্গ  
ঘামে ভেজা শাড়িটা অসহায় ভাবেনি নিজেকে কোনদিনই
ব্লাউজের হুকগুলোও আজ ওর সন্তানযোদ্ধা 
খোলা মাঠে সীমান্ত সামলে নতুন ধানের বীজ বুনেছে সে একাই  
নিজেকে শুকিয়ে নেবার  জন্য বাঁশদড়ি নয়  …
আমার একটা নগ্ন অঞ্চল আর একটা তর্জনী চাই শুধু
আর একটা কথা ছিল। এতদিন আমি কোনও সংঘাতে জড়াই নি। কেবল গা ঝেড়ে পরিস্কার করেছি নিজেকেই। এই ক’দিনের ধুলো ঘেঁটে যতরকমের মুখোশ কুড়িয়েছি, তার বেশিরভাগটাই ফোটোজেনিক। হয়ত বেঁচে থাকার শর্তে এদেরও অন্ধকার ঘরে শুয়ে থাকবার কথাই ছিল। কিন্তু পারেনি…
আলোর কথা যেদিন সকলকে শুনিয়েছিলাম, সেদিন থেকে আমিও বিক্রয়যোগ্য।