কবিতা
স্মরণদেব
অনিলেশ গোস্বামী
বিষ্ণু বিশ্বাস
বিশ্বনাথ কুন্ডু
কস্তুরী সিনহা
কাশীনাথ চক্রবর্তী
বিকাশ যশ
সঞ্জীব কুমার ঘোষ
মৌসুমী চক্রবর্তী
চায়না খাতুন
মিলন মাঝি
রমা মহান্তি
শাশ্বতী চক্রবর্তী
অযান্ত্রিক(অনুপ রায়)
তপনকান্তি মুখার্জি
প্রবণ পালন চট্টোপাধ্যায়
অরিজিৎ বাগচী
পিয়াংকী
কৌশিক চক্রবর্ত্তী
ভিডিও
প্রণব নস্কর
গৌতম চক্রবর্তী
পাপড়ি বোস
সুলগ্না মিত্র
কাকলি ভট্টাচার্য্য
পাপ আর পুন্য
সেতো চলে পাশেপাশে,
পাপের বোঝা কাঁধে দেখে
পুন্য বেজায় হাসে।।
পুন্য যেটা মনে করে
পাপ যে করে আসে,
পাপ আর পুন্যের খেলা
সেতো চলে বারোমাসে।।
পুন্য ভেবে খাবি যেটা
ধংস করে কাকে,
কষ্টে যে তার প্রান গিয়েছে
কে তার খবর রাখে ?
পিঁপড়ের দল প্রসাদ চাটে
আরশোলা টিকটিকি,
বিষ লাগাবি তারই তরে
পাপ থাকেকি বাকি ?
মুরগি পাঁঠার ছটফটানি
রাখিস কি আর মনে,
খেয়ে খাইয়ে তৃপ্তিলাভে
পাপ পুন্যর সনে ।।
দৃষ্টি আর মনের ভাষায়
কতই কিনা করিস,
দেহের জন্য পুন্য করতে
পাপই তো করে মরিস।।
ঘরছেরে তুই পুন্য করতে
আসিস মন্দিরেতে,
সেই খরচে পুন্য কর্মে
কেওতো পেতো খেতে।।
আষ্টেপৃষ্ঠে সব লুটে খাস
যেই না সুজোগ পাবি,
কার পাপেতে পুন্য হল
সেই কথাটি ভাবি।।
পাপপুন্য আপেক্ষিক হয়
সেই কথাটা মানিস,
পাপপুন্য যথায় তথায়
হবেই সেটা জানিস।।
পুন্যে যারা বাহবা পায়
পাপ থাকে তার পিছে,
পাপপুন্যের খবরদারির
দম্ভটাই তো মিছে।।
মাথা নীচু করে সবকিছু মেনে নাও তুমি,
মাথা উঁচু করে তাকাতে পারোনা কোনোদিন ।
তাবৎ মানুষ তুলনায় উচ্চতর ভেবে
নিজের উচ্চতার মাপ জানোনি কখনো ।
শূন্য থেকে জন্ম নেওয়া গভীর
শূন্যতা
তার সব বেদনাগুলি মেখেছো শরীরময়,
বহুদূরে ঘুম ঘুম নির্জন চরাচরে একা
সহিষ্ণুতা সাধনা করে শুধুই ভেবেছো তুমি
এভাবেই মোক্ষলাভ, এভাবেই আসে চিদাভাস ।
তোমার মতন মানুষ চিরকাল থাকে নমনীয়,
বিপদে বহুদূরে, নিরাপদ নিভৃতে নিরালায়
নরম মানুষজন ক্যান্ডেললাইট
ডিনার সাজায়,
অঢেল পানীয়…নামে রঙিন রাত্রি…ফিসফাস…
দূর্বল মানুষ সবল মেরুদন্ডের গল্প ভালোবাসে
ভেবে নাও এ-কাহিনী ঘুণধরা উপকথা
হয়তো রহস্য নির্মাণ হবে সন্ধ্যাঘনালে
তবুও পাগল এখানেই কবিতা লিখে যায়
কুয়াশার বৃন্তে খোঁজে বজ্রগর্ভ মেঘ…
নেশাটা জমে ওঠে, স্বপ্ন দেখা শুরু করো তুমি,
কাঙ্খিত নারীর দেহ নগ্ন করো
অবাক দর্পণে,
গর্ভবতী সময়ের জরায়ু থেকে তোমার ঔরসে
ভেবে যাও জন্ম নেবে স্বপ্নে দেখা তেজস্বী পুরুষ ।
সেই ছেলেটা ভীষণ কড়া ঘরের দরজা বন্ধ
বাইরে তখন রঙের আগুন ফাগুন দিনের গন্ধ ।
কঠিন ছেলে একলা ঘরে খুলবে না তো খিল
মাখবে না তো আর কখনো আবিরও একতিল ।
কারো কথাই শুনবে না আজ গৃহতে বন্দি
কেউ জানে না এর পিছনে কী অভিসন্ধি ।
কেউ না জানুক সে তো জানে রঙ রয়েছে মনে
সেই নেশাতে পাগল যতই থাকুক ঘরের কোণে ।
রঙ ছাড়াও দারুণ রঙিন নিজেকে তার লাগে
সেই মেয়েটা রঙ দিয়েছে কত বছর আগে ।
সে রঙ আছে মর্মে লেগে এমনই অক্ষত
বরং আরো খুলছে এখন দিন যাচ্ছে যত ।
ও মেয়ে তুই কোথায় আছিস কোন সে অমর্ত্যে
প্রৌঢ় ছেলে ভাসছে আজো রঙিন আবর্তে ।।
নীল তিমি থেকে অতি ক্ষুদ্র পিপিলিকা
ভাইরাস ব্যাক্টিরিয়া,অদৃশ্য জীবাণু,
জীব-জড়ের মধ্যবর্তী প্রাণকণিকা
শক্তি স্রোতে গতিশীল অণু-পরমাণু।
সর্বত্র প্রাণস্পন্দন,জীবন আভাস,
জন্ম জীবন যাপন,প্রতিনিধি রাখা;
সর্বত্র শক্তি ধারার বিচিত্র প্রকাশ,
জীবনের পরিণতি মরণকে ডাকা।
এ ব্রহ্মাণ্ড-প্রকৃতিতে মানুষ নগণ্য,
সীমিত জীবন কাল মহাকাল মাঝে;
তার খ্যাতি পৃথিবীতে মননের জন্য
মহাকাশে তারা-গ্রহে তা লাগে না কাজে।
এ জগত প্রকৃতিতে এই হল সত্য,
সব নশ্বর অনিত্য,শক্তি শুধু নিত্য।
বনফুলের মাঝে তুমি
প্রকাশ হলে স্বয়ং
সমাজ জীবন পল্লীকথায়
তোমার গভীর মনন।
পথের পাঁচালী, অশনি সংকেত,
ইছামতীর মাঝে,
অপরাজিত আজও তুমি
জাগ্রত ইতিহাসে।
গ্রাম বাংলার রেলপথটা
মাঠ ছুঁয়েছে যেথায়,
ধানের ক্ষেতে অপুদুর্গা
এক ছুট্টে সেথায়।
হাতছানি দেয় চাঁদের পাহাড়
সব ছোটোদের মাঝে,
রোমাঞ্চ আর রহস্য ভরা
পথের বাঁকের খাঁজে ।
তোমার লেখনী স্বপ্ন বেদনা
অভিমান ভরা মন
বাংলায় তুমি চির স্মরণীয়,
বরণীয় তুমি সবার প্রণম্যজন।
চব্বিশ পরগনা থেকে কত দূরে
ঘাটশিলা এলে শেষে,
গৌরী কুঞ্জে আশ্রয় নিলে
স্মৃতিভরা দিন শেষে।
সুবর্ণরেখা নদীর তীরে
তোমার সমাধি মাঝে,
অশ্রু সজল দুটি নয়নে
তোমাকে হৃদয় খোঁজে।।
আমি তৃষিত ফুলের বুকে আনি
মাথা তুলে বাঁচবার আশা
আমি মূক বৃক্ষের মুখে দিই
জীবনে লুকিয়ে থাকা ভাষা।
আমি ভেসে চলি আপন খেয়ালে
ভেলা ক’রে সুজন বাতাস
অসীম সাগরবুকে জনম আমার
বাসস্থান সুনীল আকাশ।
নিদাঘের দাবদাহে পীড়িতের মুখে
আমি আনি অনাবিল হাসি
কখনও সোনার ফসলে
ঢালি শিলা রাশি রাশি।
বন্যায় ভাসাই আমি মাঠঘাট খেত
সুরম্য নগর,
আবার বন্ধ্যাভূমিকে করি
চাষযোগ্য অতি উর্বর।
আমার লাগেনা ভিসা যেথা খুশি যাই
ঘুরি আমি দেশ-দেশান্তর
শান্তিজল ঢালি আমি সকলের শিরে
বেঁচে থাকি যুগ-যুগান্তর।
বিরহী যক্ষের ব্যথা শোনাই প্রিয়াকে
দূত হয়ে যাই অলকায়
প্রিয়ার কথা শুনে আমিও পেলাম ব্যথা
ভাবি, কীভাবে ওদের মেলাই।
সাগরে জনম আমার সূর্যের তাপে
সাগরেই হ’ব তো বিলীন
রূপান্তরের আগে তোমাদের মুখে
যেন দেখি হাসি অমলিন।
শরৎ মানে কাশের বন
শরৎ মানে আলো
শরৎ মানে সুখের পরশ
সাজ সজ্জায় ভালো।
শরৎ মানে শিউলি গোলাপ
হাজার ফুলের মেলা
শরৎ মানে মেঘলা আকাশ
রোদ বৃষ্টির খেলা।
শরৎ মানে শান্ত হাওয়া
আগমনির গান
শরৎ মানে এক ফালি চাঁদ
জোয়ার -ভাঁটার টান।
শরৎ মানে ভোরের শিশির
ঢাকের বাদ্যি শোনা
শরৎ মানে পুজোর আমেজ
সুখের সেদিন গোনা।
শরৎ মানে পাওনা-দেনা
সাজিয়ে রাখি যতো
শরৎ মানে ইচ্ছে -ডানা
স্বপ্ন শত শত ।
শরৎ মানে – ভালোবাসা
এক সাথে পথচলা
শরৎ মানে লুকিয়ে রাখা
মনের কথা বলা।
শরৎ মানে সবুজ – ধরা
শাল-পিয়ালের বন
শরৎ মানে বৃষ্টি ভেজা
অবুঝ দুটি মন।
উদ্বেগের তো শেষ নেই আজ আর
বিশ্বজুড়ে চলছে মহামারী।
অনুজীবকে দোষ দিয়ে কি লাভ !
মানব পরিবেশ করছে কারা ভারী ?
সন্ত্রাস নামক মহামারীটা আজ
জেঁকে বসেছে সারা বিশ্বজুড়ে ।
লোভ নামক মহামারী টাও
মানবতাকে খাচ্ছে কুরে কুরে ।।
হুমকি নামক মহামারী টা আজ
কিছু মানুষের হয়েছে মজ্জাগত ।
শোষণ নামক মহামারীটাও
গরীব কে করছে ক্ষতবিক্ষত ।।
শ্রেষ্ঠত্ব নামক মহামারী টা আজ
প্রকৃতিকে দেখায় শুধুই ক্ষমতা ।
শাসন নামক মহামারী টাও
কেড়ে নিচ্ছে মানবিক স্বাধীনতা ।।
ক্ষুধা নামক মহামারীটা আজ
কিছু মানুষের শুধুই চাপা কান্না ।
লালসা নামক মহামারীটাও
সমাজে আজ ঘটিয়ে চলেছে বন্যা ।।
ধর্ম নামক মহামারীটা আজ
মানুষে মানুষে করছে ভেদাভেদ ।
হিংসা নামক মহামারী টাও
মনুষ্যত্বের করছে ব্যবচ্ছেদ ।।
জ্ঞানহীন নামক মহামারী টাকে আজ
অনিচ্ছাতেও প্রকৃতি করছে ধারণ ।
কর্মহীন নামক মহামারী টাও
বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের আজ কারণ ।।
পরিসংখ্যানের খাতায় তুলনা করে দেখো
প্রকৃতির মহামারীর বলি যত প্রাণ,
লক্ষ গুণ বেশি মানব মহামারী থেকে
কিভাবে বিশ্ব পাবে পরিত্রাণ !
টিকা করণে প্রকৃতির মহামারীর
হবেই যেন ঠিক পরাজয় ।
শুভ চিন্তার মানুষেরা এক হও
বিশ্বমানবতার হোক শুভ জয় ।।
শিখছি ..শিখছি ..শিখেই চলছি শেলেট শিশুপাঠ
রঙসাগরের স্লেটগুলো সব তেপান্তরের মাঠ
হাঁটতে হাঁটতে জীবনপথে ..কোন্ শহরের মোড়ে
উথালপাথাল স্বপ্ন যত …মুঠোয় নিলাম পুরে
হরেক মানুষ , হরেক জীবন , অনেকরকম বাঁচা
লোহার শিকল ঠুকছে পাখি , ভাঙছে ভয়ের খাঁচা
শিখছি এখন গাছের কাছে লড়াই করে টেকা
শিখব শিশুর অমল খুশি ..নিজের চোখে আঁকা
শিক্ষা পূরণ ..শিক্ষা বাকি ..আলোয় অন্ধকার
আত্মজাকে সঁপে দেবো সেই স্বপ্নের অধিকার
একা একা হাঁটছি পথে একাদশী জ্যেৎস্না মেখে
হুবহু একটা কিশোরী আশার আলোর ভোর,
দেখি দূর শ্মশানে জ্বলছে চিতা
কে হারালো, কার বা বধূ।
কে যেন দাঁড়িয়ে আছে এলোকেশে
ছুটে গিয়ে দেখছি চেয়ে আমার বৃক্ষমাতা।
শুরু হলো আবার যাত্রা
কেউ কাছে নেই তুইও তো নেই
বেশ তো আমার পাশেই ছিলিস,
আজ কি যে তোর ধরল মরন
আমার থেকে অনেক দূরে গেলি চলে।
বেশ করেছিস ,
না হয় আমার চলার পথে
আলপনা আঁকা সেই চুমোতে
আকাশ ছোঁয়া তৃপ্তি বুকে
হাঁটছে তোর পাগলা ভোলা তোর আশাতে।
ওরে খেপি তুই যেখানে আছিস শুয়ে
যাচ্ছি সেথা জ্যেৎস্না ছুঁয়ে,
সাবধানে থাক তোর মতো ঐ ভোর কিশোরী
আলো – ছায়ায় পথ দেখিয়ে যাচ্ছে নিয়ে।
পৌঁছে যাবো ঠিক সেখানে
দেখবো চেয়ে আমার খেপি
দাঁড়িয়ে আছে জ্যেৎস্না মেখে নতুন এক ভোরে।
যে যন্ত্রণা বুকে নিয়ে তাকে “তুমি” বলে ডাকি ,
সে যন্ত্রণা আজও আমায় করছে যাপন !
যে ইচ্ছা গুলো মরুঝড়ের বুকে দিয়েছি উড়িয়ে-
সে স্বপ্ন চোরাবালির মাঝে করছে হাঁসফাঁস-
শুধু “তাকে” বুঝে নিতে ।
শরীরের গায়ে শরীর মেখে কি সুখ দিয়েছে ধরা !
সাজানো ড্রেসিং টেবিল , ফুলের টব ,দামি শাড়ি ,
সোনার কানের দুল , হীরের আংটি …
স্বজত্নে পরা “তার” নামের সিঁথির সিঁদুর কপালের টিপ …
ফেলে আসা স্মৃতি শুধু নোনা জল !
আমি তাকে “তুমি”বলে ডাকি , তুই তো শুধুই ভাবনা !
অনেক না বলা কথা তুই থেকে তুই তেই …
আজও আছিস তাই …তুই যা ছিলিস আগে-
ফুচকা চটপটি আর না বলতে পারা কবিতার সাথে ।
এখনো লিখি কবিতা , এখনো করি গান …
লিখি কতকিছু লিখি শতশত নাম !
মনের গভীরে রয়েছে যে “তুই” গাঁথা
কোনো কবিতায় হয়নি তা লেখা …
মৃদু হাসির আড়ালে,
যে যন্ত্রণা বুকে নিয়ে তাকে “তুমি” বলে ডাকি !
…শুধু তোকে !”তুমি” বলা হলো না ॥
তোর মিথ্যে গুলোকে এক গন্ডুষে পান করেছিলাম আমি।
বুঝিনি সেদিন, আমি ছিলাম তোর ক্ষণিকের প্রয়োজন।
বলেছিলি,আমি তোর প্রিয়জন!!
সত্যি কি প্রিয়জন!? নাকি স্বার্থের প্রয়োজন।
প্রিয়জন কি কখনো প্রয়োজন হয়?
আর যে শুধু প্রয়োজন,সে কি কখনো প্রিয়জন হয়ে উঠতে পারে!?
প্রয়োজন শেষে তোর কাছে আমি শূন্য।
বড়ো ভুল ভাবে ওরা,বড়ো ভুল বলে ওরা,আমি নাকি তোর প্রিয়জন!!
প্রিয়জন তো তার কাছেই হয়ে ওঠা যায়,প্রয়োজন শেষেও যে আগলে রাখে,ভুলে যায় না।
সকলের কাছে প্রয়োজন হয়ে ওঠা খুব সহজ,প্রিয়জন হয়ে থাকাটা খুব কঠিন।
প্রয়োজন সময়ের সাথে সাথে বদলে যায়।
সত্যিকারের প্রিয়জন কি কখনো বদলে যায়!?
একদিন হাত ধরে অনেকটা পথ হেঁটেছি দুজনায়,আজ প্রয়োজন শেষে হাতের বাঁধনটা আলগা করে দিয়েছিস।
মিথ্যে ব্যস্ততায় ডুবিয়ে দিয়েছিস নিজেকে।
প্রিয়জনের কাছে সময় চাইতে হয়না,সে সময় দেবার জন্য প্রস্তুত থাকে।প্রিয়জনের প্রয়োজনটাই তার কাছে প্রাধান্য পায়।
অনেকটা বদলে গেছিস তুই!একথাই বা বলি কি করে।
আমার তোকে চিনতে ভুল।
তোর কাছে প্রয়োজন হিসেবে থেকে,শূন্য হিসেবে থেকে,নিজেকে তোর কাছে আর নিজেকে নিজের কাছে ঠকানোর চাইতে একা থাকা ভালো।
প্রিয়জন হয়ে থাকিস না হয় তুই শুধু আমার হৃদয় মন্দিরে।
স্বার্থ ভুলে হাজার প্রয়োজনের ভিড়ে খুঁজে নিস তোর প্রিয়জনকে।যে হবে শুধু তোর সত্যিকারের প্রিয়জন।
মাটিতে দাঁড়িয়ে মেঘ ছোঁবার স্বপ্ন,
ছুটে যাওয়া শুধু মেঘের টানে,
একটা করে কোলাপসিবল গেট খোলা,
আর সিঁড়ি দিয়ে ওঠা, উচ্চ শিখরে,
এবার শুধুই আমোদ প্রমোদ জীবন।
সিঁড়ি ভাঙতে -ভাঙতে আজ বড়ই ক্লান্ত,
জীবনের সিঁড়ি ভাঙার অংকে বড়োই কাঁচা।
সুখ-স্বাচ্ছন্দ শুধুই গোঁজামিলের
আজ্ও মেঘ অধরা, এই সাপ লুডো খেলায়,
জীবন আজ একা নিঃসঙ্গ! চারদিক শুধুই
অন্ধকার! আর অন্ধকার,!
আকাশের মেঘ ছোঁবার নেশায়
জীবনটাই আজ কালো মেঘ।
কোনো দিব্য দৃষ্টি লাগে নি বুঝে নিতে,
বিকেলের কথা, দিনের সমাপ্তি।
সময়ে ফিরে গেছে রত্নের সন্ধানে,নোনা গন্ধের শরীরে,
রত্ন পায়নি, পেয়েছে শুধু বুক জুড়ে রক্তিম অন্ধকার।
এক লপতে বিন্দু বিন্দু নোনা ঘামের মতো জেগে আছে প্রাণে।
অতৃপ্তি, সেটা বুঝতে কোনো দিব্য দৃষ্টি লাগেনি।
বুকের কানাচ, অথবা ক্লান্ত আঁচল থেকে ভেসে আসছে
বৌদ্ধ বিহাররে আরতির ধ্বনি ,মনে হয় বিষাদের সুর,
ঝুলে পরা দুই কাঁধে যৌবনের দৃপ্ত অহঙ্কার।অথচ কিসের ?
জানা হয়নি এখনো
তৃপ্তির বোধ বড় অলীক,আধবোজা দুই চোখ নীল
নেশাতুর হৃদয় মেঠোবাউলের মতো তৃপ্তিহীন,
সে কি বুঝবে ?পড়ন্ত যৌবনের হলদেটে আলোয়
শরীর খুঁজে ফেরে বিরহের ভাষা,
বেশি তো নয় ,সামান্য সবুজ স্বপ্নের মধ্যে
সে চেয়েছিলো শুধে দিতে হৃদয়ের ঋণ।
ঝুলে পড়া এলোখোপা,হালকা কাঁধ জুড়ে,
ঝরে পরা কয়েকটা কালো চুলের মাঝে ক্লান্তি থাকে মিশে ;
হিসাবের খাতা নিয়ে সময় দাঁড়ায় এসে তার কাছে,
গুনে যায় কপালে বলিরেখা ,চোখের তলায় দাগ
ফেলে আসা জীবনের সুদ ,লাভ, ক্ষতি
লাল আচিলের দাগে চিহ্নিত করে দিয়ে অতৃপ্তি।
দেখালে সমস্ত স্মৃতিরঋণ জমা
নীল মলাটের খাতায়, ঘুমন্ত, পরিশ্রান্ত।
রক্তে তেজ নেই, শরীর জুড়ে ভাটার শান্ত সাগর অতল,
কপাল জুড়ে জোয়ারের জলের ফিরে যাওয়ার দাগ,
দুহাতে হালকা ফুটে ওঠা শিরে খেলা করে যায় শুন্যতা,
দুগাল জুড়ে শুকনো অশ্রুজল।
গলার কাছে অজানা ভয়ের পায়ের শব্দ,
বিরোহী রাত একলা থাকে জেগে।
সামনে যাদের দেখা যায়, সবার মুখেই
কৃত্রিম যৌবনের সঞ্চয়,বিকেলে আলোর সমাপনীসুরে,
সব তোড়জোড় ঢাকা পড়ে যায়,
তৃপ্তি ? মনে হয় যেন তাত্ত্বিক অঙ্গীকার।
নিরপেক্ষতা হয়ে যায়,
শুধু ভুল আভিধানিক শব্দ।
একদিন সবাই সবুজ বলে ডাকতো,
সবুজ ছিল নীল ছিলো লাল ছিলো যৌবনে,
আজ শুধু হলুদের ছোপ ধরা সংসার।
কোনো দিব্য দৃষ্টি লাগে নি বুঝে নিতে,
বিকেলের কথা, দিনের সমাপ্তি।
অতৃপ্তি, সেটা বুঝতে কোনো দিব্য দৃষ্টি লাগেনি।
কিছুদিন ধরেই কালো মেঘ ঘুরছিল আকাশে ।
তারপর ঝড় উঠলো , বৃষ্টি নামলো ,
জল বাড়লো , বাঁধ ভাঙলো ,
বাড়ির চাল উড়লো , গাছ পড়লো ,
মানুষ হলো গৃহহারা ।
রাজমুখ চকচকে সরকারি ত্রাণে ।
ঘর ভরছে , পকেট ভরতি হচ্ছে ।
কারো কারো ঘরে আলো জ্বালাতে
একমুঠো অন্ধকারের বড়ো দরকার পড়ে ।
ঝড়ের মধ্যে ডানার আন্দোলনে
তুমি উড়ানের কবিতা লেখ —-
#
অভিমানী বিকেল তোমাকেই খোঁজে
কালো রাত জুড়ে তারা খসা
সান্ধ্যভাষায় তুমি শ্লোক আওড়াও।
#
আজ প্লাবনে, কেউ ভালো নেই —
গলুইয়ে তুমি বড্ড একা
সামলে রাখো তরণী ,
পাটাতনের নীচে সযত্নে রক্ষিত আছে
আমাদের সমস্ত কবিতা।
নিদ্রা থেকে নদী হয়ে
বয়ে গেছে অনন্ত প্রিয়মুখ ।
তোমাকে যে স্বপ্নের কথা বলেছিলাম ,
ওরা এখন পাহাড়ের পশ্চিম ঢালে
খাদের ভেতর গড়ে তুলেছে একান্নবর্তী পরিবার ,
বিধাতা ও ইঁদুর মারার বিষ সব এক।
সূর্য ডুবে গেলে পড়ে থাকা নিস্তৃণ মাঠ ও
বিকেলের সাথে নেমে আসা কুয়াশারা জানে
এই যে আমি অন্ধকার দেখলে
হি হি করে হাসি
চিৎকার করি
লাফাই
এ কোনো পাগলামো নয় ,
আসলে চাঁদের কারখানায় অন্ধকার ও
আমার মতোই একা,
তাই শিরা কালোর ছোঁয়া পেলে
একটু খরস্রোতা হয়ে যাই এই যা
আজকাল ট্রেনের কামরায় উঠে দাঁড়িয়ে থাকি।
সিটগুলো পাশে পড়ে থাকে। ওরা বোবা। তাই ইশারা করে ডাকে।
পাথরের গায়ে একফোঁটা জল ছিঁটিয়ে সরে যাই
তবু বসি না। বসলে একটা নির্দিষ্ট সময় পর উঠতে হয়।
তারপর লাইনে দাঁড়াতে হয়।
অথচ সেই অর্থে দেখতে গেলে আমার কোনো তাড়া নেই
প্রজাপতির মতো তো আমার গায়ে কোনো আলোও আঁকা নেই
বাতিল কামরায় সিট কমে যাচ্ছে ক্রমশ
ভর্তুকি দিয়ে আশ্রয় কিনতে হয় এখন
আমার কোনো রোজগার নেই। আমার কাছে শুধু কয়েকটা ব্যস্ত কামরা আছে
তাই ভয় পাই। খুব ভয় পাই।সিঁটিয়ে থাকি।
একবার বসলে যদি না উঠতে পারি।
অনেকগুলো মুখ সামনে । সিগারেটের লাল আলোয় জ্বলছে , নিভছে , যেন টি.আই.প্যারেডে দাঁড়িয়ে সবাই । নির্দিষ্ট মুখটিকে খুঁজে চলেছি , পাচ্ছি না । একের পর এক পোড়া সিগারেট গুঁজে চলেছি পেটভর্তি অ্যাসট্রেতে । একদিকে আমি , অন্যদিকে রাত । একদিকে বিরহ , অন্যদিকে দুঃস্বপ্ন । পাহারায় অন্ধকার আর অভিমান । ভালোবাসার আর্তনাদ রডোডেনড্রনের হৃদয়ে । ছুঁয়ে আছি প্রেমহীন নিঃশব্দ । হে অসুস্থ সম্পর্ক , তুমি যাও । জীবনের ছাইপাঁশ খিল দিয়ে বসে থাকো ভাঙাচোরা হৃদয়ে।
উদ্দেশ্যহীন হয়ে পড়ে থাকা সম্পর্কটা
নিশ্বাসের ভেতর কখন যেন স্থায়ীভাবে
একটা সরু রাস্তা করে নিয়েছে।
তারপর আরশিনগর থেকে পাঁজর মহল্লা পেরিয়ে
ক্রমাগত ধাক্কা মারতে থাকে নাভির তলদেশে ।
গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আসে ,
তবুও চেঁচিয়ে বলতে পারিনা
পৃথিবী ও পিথাগোরাস এক নয় ,
তুমি সেদিনও ভুল ছিলে বনলতা ।
এসবের মাঝেই পায়ে পায়ে পেরিয়ে যাই
জ্যোৎস্না ঢেউয়ের দেশ ।
বালুতটে আকাশের মতো ছড়িয়ে থাকে
মরা তারামাছের মন্ডল।
এক উৎসবহীন রাত ,
বেকসুর খালাস পায় খুনি সেজে বসে থাকা প্রেম।
শরীরে ইচ্ছের বদলে ইলিউশন জন্ম নিলে-
জলের বদলে অভ্যস্ত হয়ে পরি
উটের মতো ক্যাকটাস চিবিয়ে খেতে।
তারপর থেকেই আমৃত্যু ,
কবিতা প্রেমের বদলে প্রক্সি দিয়ে যাচ্ছে ।