সম্পাদকের কথা
অঙ্কুরোদ্গম — একটা বিরাট মঞ্চ —- সুস্হ সাহিত্য সংস্কৃতি — আর একটা উদ্যম, সব মিলিয়ে হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া উচ্চারণ। এমন একটি বিরাটের অবিসংবাদিত অংশ হতে চায় বর্ধমান জেলাও। সদ্য এখানে পোঁতা হয়েছে বীজ। কিন্তু যেখানে লেগে থাকে মলয় বাতাস, পর্যাপ্ত জল আর শিল্পের আকর, সেখানে বীজ যে অচিরেই চারাগাছ হবে এ বিষয়ে নিশ্চিত আমরা। আসুন সবাই এই বিরাট কর্মযজ্ঞে সামিল হই। এগিয়ে নিয়ে যাই এই জেলাকেও। বর্ধমানের সমস্ত সাহিত্য সংস্কৃতি প্রেমী মানুষদের কাছে আবেদন তাঁরা যেন আমাদের সহযাত্রী হন। এক মহীরূহের অংশ হিসেবে আমাদের ‘হৃদয় হতে অঙ্কুরোদ্গম’ হোক।
কবিতা
অভীক গাঙ্গুলী
অমল ভট্টাচার্য্য
শ্রাবনী
স্নেহাশিস পালিত
প্রচিত্র সোমনাথ
ভিডিও
পায়েল পোল্যে কাঁড়ার
অভীক গাঙ্গুলী
শ্রাবণী সেনগুপ্ত
রক্তিমা
সায়ন
পপী দে
রাজশ্রী ব্যানার্জী ও অভীক গাঙ্গুলী
রাত্রী দাস
দুহাত মেলে আঁকড়ে ধরতে পারছিনা। হতে পারে ইচ্ছা আর স্বপ্ন দুটো তালগোল পাকিয়াছে। ভেবেছিলাম ইচ্ছার আবেশে স্বপ্নগুলোকে মুড়ে রাখবো ঠিক যেমন আকাশটাকে দুহাতে জড়িয়ে ধরি আমি। আজও কিন্তু ফুলের মধু খেতে এসেছে ওই প্রজাপতিটা। বুলবুলি পাখির ডাক শুনতে খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না। মেঘের মাথা নাড়ানো আজও অব্যাহত। গাছের পাতার কলরবে পরিবেশ বেশ মুখরিত। ইচ্ছে গুলো প্রবল তবু আকাশটা আজ বড়। আঁকড়ে ধরতে পারছি না….
বোধয় আজ ঘরটা বেশী অন্ধকার, অথবা হতে পারে বাইরের উজ্বলতা আর হয়তো আমার ঘরে প্রবেশ করছে না। কেন বলতে পারো ? আমি আজ বাদ কেন ? ছিলাম তো সারাটা জীবন তোমারই সঙ্গে বিশ্বাস ভরসা সবটুকু দিয়ে। তুমিই তো রেখেছিলে, তবে আজ কেন আমি একা, অন্ধকার ঘরে ? আকাশও আজ নাগালের বাইরে কেন ?
ভেবেছিলাম তোমার বাতাসে আমার নিঃশ্বাস নেবার অনুমতি পেয়েছি, তাই দুহাত তুলে আলিঙ্গন করতে চেয়েছিলাম। তোমার ফুলের সুবাশে নিজেকে সুসজ্জিত করে তোমার পাশে এসে দাঁড়াতে চেয়েছিলাম।
পাখির গুঞ্জনে গান বাঁধতে চেছিলাম। দাও নি সেসব। আজ আকাশটা অনেক বড়….
বোধহয় নিয়ে লেছি অনেক। বিনিময়ে দিতে পারি নি কিছুই। কিন্তু বিশ্বাস করো আমি চেয়েছি দিতে, দিয়েছিও। সে দেয়া বলতে পারো অনেক কম, কিন্তু আন্তরিকতা, ভালোবাসা, তাতে পরিপূর্ণ ছিলো। তুমি বোধ হয় দেখতে পাওনি। বুঝবেই বা কি করে, উজ্বলতায় আবধ্য তুমি…. তাই ভালোবাসা আজ হাহাকার করে। ইচ্ছাটা আজ বড়, স্বপ্নগুলো অনেক দূরে। না লোভী নই আমি। তোমাদের মতোন বাঁচতে চেয়েছিলাম। পরিবর্তে ভালোবাসা দিয়েছি। দেখতে পাওনি বলে ভেবোনা প্রতিদানে কিছু দিইনি আমি। দেখতে পাওনি তাই আজ ঘরটা এতো অন্ধকার…. আকাশটা আজ অনেক উজ্বল …..
চাঁদের কাছে আমার মেলেনি ঠাঁই
কনকময় জোছনাতে এলাম যে তাই
এইটুকু যেন পাই।
কালো মেঘের দল এলো অবেলায়
ঢেকে দিল চাঁদটাকে নির্ভাবনায়,
আমার শেষ জোছনাটুকু নিল বিদায়।
আমি হেঁটেছি অনেক দূরের পথে,
ভিজব বলে বরষায়।
ভুল ছিল সে চাওয়া বুঝতে পেরেই
এসেছিলাম কুয়াশায়,
প্রখর রোঁদে আলোর খেলা
সেই কুয়াশা করল নিঃস্ব আমায়।
এভাবেই হয়ে গেল আমার
সব ইচ্ছের অপচয়,
কে জানে কি কারণে
সবাই করে গেল আমায় পরাজয়…..
আজ আমি পরাজিত।
স্বপ্ন গুলো ভাঙছে, আজ আকাশটা অনেক বড়….
ইচ্ছে গুলো প্রবল তবু আকাশটা আজ অনেক বড়…
ইচ্ছা টা আজ বড় স্বপ্ন গুলো অনেক দূরে….
একা একা দাঁড়িয়ে শূন্যহাতে তাই আজ জিজ্ঞাসা করি, ধরবে আমার হাতটা সকলের মাঝে ভালোবাসা হয়ে ?
আজ আকাশটা অনেক বড়। আমি পারছি না যে তোমায় আলিঙ্গন করতে। দাও না একটি বারের জন্যে তোমার পাশে যেতে, দাও না তোমার হয়ে যেতে ! আজ আকাশটা যে অনেক বড় স্বপ্নগুলো অনেক দূরে…. চাইনি কিছু বলে কি পাবো না তোমায় ? তুমি যে আমার….হাত বাড়ালাম… আসবেই তুমি এই বিশ্বাসে….
এক কাপ চা মানে অনেক কিছু,
ধীরে ধীরে চলা যাক চা-এর পিছু পিছু।
শীতের সকালে এক কাপ চা মানে
আড়মোড়া ভেঙে অলস শরীর টাকে তাজা করে নেওয়া।
বই পড়তে পড়তে এক কাপ চা মানে
বই এর আরও গভীরে সতেজ হয়ে নিজেকে ডুবতে দেওয়া।
গল্প কিংবা কবিতার পাতে এক কাপ চা মানে
সাহিত্যের সাগরে ডুব দিয়ে শব্দ খোঁজা।
বন্ধু পরিবৃত হয়ে এক এক কাপ চা মানে
নতুন নতুন উদ্যমে রাজনীতি থেকে
ক্লাব হয়ে অট্টহাসির ফোয়ারা ছুটিয়ে মন খুলে আলোচনা।
ক্লাব কিংবা অফিসের মিটিং এ এক কাপ চা মানে
নতুন কোনও কাজের দায়িত্ব অনিচ্ছা সত্ত্বেও কাঁধে চেপে বসা।
আর মহিলা মহলে এক কাপ চা-এর মানে
আরও আরও নতুন উদ্যমে পরনিন্দা পরচর্চা।
তুমুল বর্ষায় এক কাপ চা এর মানে
পরিতৃপ্তির আহা, আহা।
বর্ষায় ভিজে বাজার থেকে ফিরে এক কাপ চা এর মানে
আনন্দ আর আনন্দ, দারুণ আর দারুণ।
অফিস থেকে ফিরে এক কাপ চা এর মানে
গলাটা ভিজিয়ে শুধুই বলা আহ্।
এক কাপ চা যেখানে সেখানে,
অফিস, ঘর কিংবা দোকানে।
এক কাপ চা বড়ই আপন
চা ছাড়া অনিশ্চিত দিন যাপন।
“মানুষ বড় কাঁদছে, তুমি মানুষের পাশে দাঁড়াও”।
কার পাশে দাঁড়াবো কবি, ভাবতে একটু সময় দাও।
সব জানা যে মানুষটি রোজ বাজারে ভিড় করে
সংক্রমণ হবে জেনেও মিটিং মিছিল রোজ করে।
ওষুধপত্রের কালোবাজারি নিয়ম করে করছে যারা,
সরকারও সঙ্গে তাদের, আমার ভাতেই ছাই বাড়া।
উন্নয়নের নাম করে তো বৃক্ষ ছেদন অহরহ
অক্সিজেন কিনতে এখন গলদঘর্ম হচ্ছে দেহ।
নগর বহর কম হলে এমন কি আর হত ক্ষতি,
মহামারী থাকত দূরে, যত্নে থাকলে এই প্রকৃতি।
ফিরি বরং বর্তমানে, গেছে যখন সবুজ সকল
ভাইরাসেই গিলে খাক বর্তমান ভবিষ্যলোক।
কোভিড যখন কমল কিছু স্বাস্থ্য -অস্ত্র বেচলো সব
অপদার্থ শাসক দেশের, জনগণ তো হবেই শব।
শব কথাতে পড়ল মনে, কোভিড দেহ ভাসছে জলে
সংখ্যাতত্ব চাপা দিতে এ কাজ করতে হৃদয় বলে ?
নদীর জলে সংক্রমণ ? ভাবতেও মন শিউরে ওঠে
পানীয় জলের আধার নদী। মানব মরণ কে আটকাবে ?
তাও আমরা থাকছি পাশে, যে যার মতো সাধ্য যেমন
প্রার্থনা করো এ ভাইরাস জলে যেন না ছড়ায় তেমন।
পুণ্যভূমি ভারত আমার ব্যাপ্তি তার অতি বিশাল
তারই হাতে বইয়ো না এই মহামারীর মৃত্যুমশাল!
১
শৈলেশ খুড়ো লোকটি ভালো রিক্সা টেনে খায়,
উপার্জন তেমন তো নয় কোনোমতে দিন যায়।
বদ স্বভাবটা সবাই জানে,
সকাল হলেই বাংলা টানে…
কৃষ্ণ ভজন করলে শুরু সাধ্য কার থামায় !
২
কণ্ঠ কিন্তু মন্দ নয়, সুরেলা গানের গলা,
দুঃখ কষ্ট যাকিছু তার সুরে সুরেই বলা।
পথ চলতি মানুষ যত –
গান শুনে খায় থতমত…
রোজ রোজ সে বাংলা টেনে শোনায় কৃষ্ণলীলা !
অকারণে হঠাৎ তুমি বৃষ্টি খোঁজো,
বর্ষা কি আর এমনি আসে বাদলা বিনে ?
তোমার ছোঁয়ায় জমলে মেঘ মনের মাঝে
বৃষ্টি তখন আপনি আসে
যে কোনো ক্ষণে, যেকোনো সাজে।
আকাশপারে কৃষ্ণমেঘে যদি না ঝরে মধুর দানা
ছড়িয়ে থাকা সোনার বীজে হয় কি নব জন্ম নেওয়া ?
কোদাল কাঁধে যদি না যাও মাঠের কাছে
বুঝবে কেমন আগামী দিনের সূর্যটাকে……
মনের মাঠে ফসল ফলাও কিষাণ সেজে
সত্যি কি আর ফলে ফসল মনের মাঝে ?
নতুন দিনের স্বপ্নটাকে
বাঁচিয়ে রাখার অঙ্গীকারে
শপথ নেওয়ার সময় হলো,
গহীন রাতের একলা ঘরে।
এমনি করে কাটে যে প্রহর
স্বপ্ন দেখার আলতো ফাঁকে
মনের মধ্যে ঘনালে মেঘ
ময়ূর তবুও মেলে না ডানা,
কৃষ্ণচূড়া ভিজলে বুঝি
ঝিঁ ঝিঁ পোকার কাঁদতে মানা ?
আঁধার কেটে নামলে ভোর
প্রতিশ্রুতি হাওয়ায় ভাসে
ইচ্ছেরা সব ডানা মেলে
কোন সুদূরে মিলায় শেষে,
ঘুম ভেঙ্গে যায় নিয়ম মেনে
ব্যস্ত রুটিন পাখির ডাকে।